আমরা জানি, বাংলাদেশ মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ নামে একটা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে। এই স্যাটেলাইটটির মেয়াদকাল ১৫ বছর। প্রশ্ন হলো, ১৫ বছর পর এই স্যাটেলাইটের কী হবে? পৃথিবীতে কি ফিরে আসবে নাকি মহাশূন্যে চলে যাবে?
বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট একটি জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট। অর্থাৎ পৃথিবীর ঘূর্ণনের সঙ্গে তাল রেখে এটিও ঘুরে কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলে তথ্য আদান-প্রদান করছে। বঙ্গবন্ধু-১ এর ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশ ও এর আশেপাশের অঞ্চলের উপর স্থির থাকবে সবসময়, পৃথিবী ঘুরলেও।
জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবীর কাছাকাছি কক্ষপথে অবস্থান করে। তাই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের কিছুটা প্রভাবের ফলে এর ঘর্ষণে এর গতি কমে যেতে পারে বা যন্ত্রপাতি ক্ষয় হতে পারে, চাঁদ-সূর্যের আকর্ষণের কারণেও মাঝেমাঝে এরা নিজের অবস্থান থেকে সামান্য বিচ্যুত হয়। তখন আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে বা গতি বৃদ্ধি করতে একে জ্বালানী ইঞ্জিন ব্যবহার করতে হয়, আর জ্বালানীর পরিমাণ নিশ্চয়ই অসীম নয়। এছাড়া এর ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ও ব্যাটারির জীবনকাল ১৫-২০ বছর হয়ে থাকে। ওজোন স্তরের বাইরে অবস্থান করায় সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মিও এ যন্ত্রের ক্ষতি করে থাকে। অর্থাৎ এদের জীবনকাল নানা ব্যপারের উপর নির্ভর করে থাকে। তো, আপনার প্রশ্ন হচ্ছে এই জীবনকালের পর এদের পরিণতি কী হয় সেটা।
পৃথিবীর চারদিকে প্রদক্ষিণরত স্যাটেলাইটগুলোকে এদের জীবনকাল শেষ হবার পর্যায়ে প্রধানত দুই উপায়ে অব্যাহতি দেয়া হয়। প্রথমত এর যে সামান্য অবশিষ্ট জ্বালানী থাকে তা দিয়ে একে পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে আরও দূরে ঠেলে দেয়া হয়। দ্বিতীয়ত ওই জ্বালানী ব্যবহার করে এর গতি কমিয়ে দেয়া হয় যেন এটি পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ে। পড়ার সময় বায়ুমণ্ডলের ঘর্ষণে এটি পুড়ে ধ্বংস হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু-১ এর ক্ষেত্রেও এই দুইটি পথের একটি অনুসরণ করা হবে