ডার্ক চকলেট খাওয়ার উপকারিতা কী ?

ডার্ক চকলেট 

প্রাচীনকালে বহু শতাব্দী ধরে কোকোয়া বীজ এতই মূল্যবান ছিল যে এগুলোকে মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করা হতো। দক্ষিণ আমেরিকার প্রাচীন মায়া ও অ্যাজটেক সভ্যতার মানুষজন বিশ্বাস করত, কোকোয়া বীজের জাদুকরী শক্তি আছে। কিংবদন্তি রয়েছে, অ্যাজটেক রাজা মন্টেজুমা যখন স্প্যানিশ পর্যটকদের চকলেট খেতে দেন, তখন তারা এর তিতকুটে স্বাদ একেবারেই পছন্দ করেনি। এরপর ১৭ শতাব্দীতে এসে ধীরে ধীরে ইউরোপে চকলেট জনপ্রিয় হতে শুরু করে।

ডার্ক চকলেট খাওয়ার উপকারিতা কী ?


আরো পড়ুন : ৯ টি জিনিস যা প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্কদের রক্ত ​​পরীক্ষা করার আগে জানা উচিত

মায়া ও আজটেক মানুষের কথা মিথ্যা নয়। চকলেটের আসলেই জাদুকরী গুণ রয়েছে। বিশেষ করে ভালো মানের কালো বা ডার্ক চকলেটে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান। ৭০-৮৫ ভাগ কোকোয়াসমৃদ্ধ চকলেটকেই বলে ডার্ক চকলেট। এতে আছে আঁশ, লোহা, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, ম্যাংগানিজ, পটাশিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক ও সেলেনিয়াম। দিনে অল্প পরিমাণ ডার্ক চকলেট খেলেও ৫০ ভাগ পর্যন্ত হৃদ্রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি কমে যায়। নিয়মিত চকলেট খেলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ে। ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও কমে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ও শারীরিক প্রদাহ রোধেও ডার্ক চকলেট সহায়তা করে।

ডার্ক চকলেটে প্রচুর পরিমাণে সক্রিয় জৈব উপাদান রয়েছে, যা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এসব উপাদান হলো পলিফেনলস, ফ্ল্যাভানল ইত্যাদি। অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট কোষের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া রোধ করে এবং ক্যানসার রোধে ভূমিকা রাখে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেকোনো ফলের তুলনায় ডার্ক চকলেটে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট উপাদান বেশি।

কোকোয়া বীজের ফ্ল্যাভানল মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বাড়ায়, যা মানুষকে আর উদ্দীপিত করে তোলে। নেচার নিউরোসায়েন্সের এক গবেষণায় দেখা গেছে ৫০ থেকে ৫৯ বছর বয়সী সুস্থ ব্যক্তি যারা তিন মাস উচ্চ ফ্ল্যাভানলযুক্ত কোকোয়া পানীয় পান করেছেন, তাঁদের স্মৃতিশক্তি বেড়েছে।

আরো পড়ুন : জিমেইল থেকে সরাসরি কল করার সুবিধা আনছে গুগল

চকলেটের আরেকটি বড় গুণ এটি বিষণ্নতা দূর করতে মহৌষধের মতো কাজ করে। চকলেটে থাকা ট্রিপটফেন নামের একটি উপাদান বিষণ্নতা রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এটি মস্তিষ্কে ডোপামিন বাড়িয়ে শরীরে আনন্দের অনুভূতি তৈরি করে। দিনে ৪০ গ্রাম ডার্ক চকলেট খেলে দুই সপ্তাহের মধ্যে স্ট্রেস হরমোন কমে যায়। এ ছাড়া চকলেটে ফিনাইল ইথাইলামাইন নামক উপাদান আছে, গবেষকেরা যার নাম দিয়েছেন ‘লাভ কেমিক্যাল’। তাই সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্যও নিয়মিত ডার্ক চকলেট খাওয়া যেতে পারে।

ভালো মানের চকলেট চেনার উপায়: চকলেট প্রক্রিয়াজাত করলে এর গুণগত মান কমে যায়। এ ছাড়া কোকোয়া বাটার, চিনি ও চর্বিসমৃদ্ধ চকলেট শরীরের জন্য উপকারী নয়। তাই চকলেট কেনার সময় সবচেয়ে কম মিষ্টিটি কিনতে হবে। সর্বোচ্চ মাত্রার কোকোয়াসমৃদ্ধ চকলেটই ভালো। সম্ভব হলে অরগানিক কি না, সেটাও দেখে নিতে হবে। চকলেটের লেবেলে যদি লেখা থাকে ‘প্রসেসড উইথ অ্যালকালি’ তবে তা পরিহার করতে হবে। এই পদ্ধতিতে তৈরি চকলেটে কোকোয়ার প্রাকৃতিক ফ্ল্যাভানল অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ভেঙে ফেলা হয়। কোকোয়া বাটার–বিহীন চকলেট কিনুন।

তবে এত সব উপকারী গুণাগুণ আছে বলেই যত খুশি চকলেট খাওয়া যাবে, তা নয়। পরিমিত মাত্রায় চকলেট খাওয়া ভালো। সপ্তাহে ভালো মানের অল্প চকলেট খেলেও উপকারিতা পাবেন।

আরো পড়ুন : বার বার প্রস্রাব হওয়ার কারণ কী?

Md. Moshiur Rahman Sami

হাই, আমি আমাকে চিনতে পছন্দ করি। আমি উপকারে আসতে পছন্দ করি । আমি নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পছন্দ করি। আমি চাই পরগমনের আগে পৃথিবীকে কিছু দিতে। আমি বিশ্বাস রাখি এটি করতে আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।

1 মন্তব্যসমূহ

মন্তব্য বাক্সে কোনও স্প্যাম লিঙ্ক ভাগ করবেন না

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
নবীনতর পূর্বতন